বরিশালের বাকেরগঞ্জে সোহেল খান (৩৫) নামে এক কৃষককে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জেরধরে প্রতিপক্ষের লোকজন সোহেলকে বাড়ি ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৭ সেপ্টম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার কবাই ইউনিয়নের উত্তর কবাই গ্রামে।
নিহত কৃষক সোহেল খান উপজেলার কবাই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কবাই গ্রামের নূর ইসলাম হাওলাদারের ছেলে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম জানিয়েছেন, গত ১৫ দিন পূর্বে তার একটি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। সেজন্য তিনি শনিবার বাবার বাড়িতে ছিলেন। ওইদিন দিবাগত রাত ১১ টার সময় একই গ্রামের শাহিন হাওলাদার তার স্বামী সোহেল খানকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর রাত ১২ টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মসজিদের সামনে নিয়ে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে।
তিনি আরও জানিয়েছেন-পরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে ধামাচাঁপা দিতে রাত একটার সময় মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পরেছে বলে প্রচার চালিয়ে মব সৃষ্টি করে। সকালে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
হত্যাকান্ডের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, তরমুজ চাষের জন্য গত বছর তার স্বামী সোহেল খানের নিকট থেকে উত্তর কবাই গ্রামের মান্নান হাওলাদারের ছেলে শাহিন হাওলাদার চরকবাইতে তাদের কয়েক বিঘা জমি লিজ নেয়।
এবছর ওই জমি লিজ না দিয়ে তার স্বামী নিজে চাষাবাদ করে। এ ঘটনায় শাহীন হাওলাদার প্রায় দুই শতাধিক মহিষ এনে তাদের চাষাবাদের জমির ফসল নষ্ট করে। এনিয়ে তার সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। ওই বিরোধের জেরধরে শনিবার রাতে শাহিন হাওলাদার পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করে তার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
সপ্তম শ্রেনীতে পড়ুয়া নিহতের মেয়ে ফাতিমা আক্তার জানান, তার বাবা একজন কৃষক। তিনি ডাকাত নন। অথচ তরমুজ চাষের জমি লিজ না দেয়ায় শাহিন হাওলাদার পরিকল্পিতভাবে তার বাবাকে হত্যা করেছে।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, রবিবার দিবাগত রাত পৌনে চারটার সময় ৯৯৯ থেকে একটি কল আসে চরকবাই গ্রামে একজন ডাকাত আটক করে রাখা হয়েছে।
এ সংবাদ পেয়ে তিনিসহ থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেলের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন-নিহতের পরিবারের দাবি পূর্ব শত্রুতার জেরধরে স্থানীয় শাহীন হাওলাদার পরিকল্পিতভাবে সোহেল খানকে হত্যা করেছে। দুটো বিষয় গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মব সৃষ্টির অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শাহীন হাওলাদার।