রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
নেছারাবাদে পাষণ্ড ছেলে ও পুত্রবধূর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণে বাঁচতে বাড়ি ছেড়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি। নির্যাতনের শিকার ওই দম্পতি হলেন মো. শাহাদাৎ হোসেন (৬০) ও তাঁর স্ত্রী মোসা. মমতাজ বেগম।
অভিযোগে তাঁরা জানান, বড় ছেলে মো. মিলন কৌশলে তাঁদের অর্ধেকের বেশি জমি নিজের নামে লিখে নিয়ে এখন আর কোনো ভরণপোষণ দেয় না। বরং সম্প্রতি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাবা-মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামে। নিরুপায় হয়ে ওই দম্পতি নেছারাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, তবে এখনো কোনো বিচার পাননি তাঁরা।
অভিযোগে বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন বলেন,আমার তিন ছেলে। বড় ছেলে মিলনের কাছে চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা নিয়েছিলাম। সে কৌশলে আমাদের ২২ শতাংশ জমি নিজের নামে লিখে নেয়। পরে বাড়ির বাগানের সুপারি পাড়াকে কেন্দ্র করে ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি বেগম আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বেদম মারধর করে। তাদের প্রহারে আমার দু’টি দাঁত পড়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন,ছেলে এখন বাকি জমি লিখে দিতে বলছে। আমরা রাজি না হওয়ায় প্রায়ই মারধর ও নির্যাতন করে। গত ৬ অক্টোবর সকালে নারিকেল-পাড়াকে কেন্দ্র করে আবার ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে ছেলে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। রাতে আবার আমাকে ও স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।”
শাহাদাৎ হোসেনের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন,ছেলে মিলন কৌশলে জমি লিখে নেওয়ার পর এখন আমাদের কাছে টাকা চায়। না দিলে বাকি জমি লিখে দিতে বলে। বাড়ির কোনো ফসল ধরতে দেয় না। ৬ অক্টোবর আমার স্বামীকে মারধর করলে আমি বাধা দিতে যাই, তখন আমাকেও মারে। পরে আমরা স্থানীয় মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নিই।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন,ওই বৃদ্ধ দম্পতি খুবই অসহায়। তাঁদের ছেলে মিলন কারও কথা শোনে না। তাই আমি তাঁদের থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি।”
ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. রুহুল আমীন বলেন,ছেলে মিলন খুবই খারাপ প্রকৃতির। জমির জন্য বাবা-মাকে নিয়মিত মারধর করে। কয়েক দিন আগে তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি নিজেই তাঁদের থানায় যেতে বলেছি। এই পাষণ্ড ছেলের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।”
নেছারাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বনি আমিন বলেন,বৃদ্ধ দম্পতি যেন থানায় এসে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a Reply