
ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলের স্থলভাগে আঘাত হানতে শুরু করেছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’। এর প্রভাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশের বন্দরনগরী কাকিনাড়া উপকূলে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠছে এবং ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) সর্বশেষ আপডেটে জানিয়েছে, এটি উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে থাকবে এবং আগামী ৩-৪ ঘন্টার মধ্যে মাছলিপত্তনম এবং কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যবর্তী বন্দরনগরী কাকিনাড়ার ওপর দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করবে। এসময় এটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারণ করবে এবং বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
ইতোমধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশের ৩৯টি জেলায় ‘রেড এলার্ট’ জারি করেছে ও অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি। তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ু রাজ্যের অরেঞ্জ ও ইয়েলো সতর্কতা জারি করেছে। তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, কেরালা এবং কর্ণাটক রাজ্যেও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলয়ায় অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ু রাজ্যের একাধিক স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু রাজ্যের মন্ত্রী, সাংসদ এবং বিধায়কদের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
আইএমডি আরও সতর্ক করেছে, ঘূর্ণিঝড়টি নিচু এবং প্লাবিত অঞ্চলে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। কৃষকদের যতটা সম্ভব ক্ষেত থেকে অতিরিক্ত পানি সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া বুলেটিনের বিষয়ে আপডেট থাকার এবং সুরক্ষার জন্য প্রশাসনের জারি করা পরামর্শ অনুসরণ করার জন্য জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, মোন্থার কারণে মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের গন্নাভরম বিমানবন্দরে ৩০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার ঘোষণা করা হয়েছে। বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দর থেকেও মঙ্গলবারের জন্য সমস্ত ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় মোন্থার কারণে ওড়িশা ও বিশাখাপত্তনমের মধ্য দিয়ে যাওয়া ৩২টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিশাখাপত্তনম- তিরুপতি, বিশাখাপত্তনম-চেন্নাই, বিশাখাপত্তনম- কিরণদুল, বিশাখাপত্তনম-কোরাপুট রুটে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে। সব মিলিয়ে ৬৫টিরও বেশি লোকাল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করেছে কতৃপক্ষ।
সূত্র: এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস