শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন
 
								
                            
                       বরগুনায় মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করার দায়ে মামলার বাদীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন— বরগুনার বেতাগী পৌরসভার খাদ্যগুদাম সড়কের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে কাওসার হোসেন (৩৯)। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর কাওসার তার চাচা মোস্তফা হানিফের (৬৫) বিরুদ্ধে বেতাগী থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, কাওসারের বোনের ১০ বছরের শিশুকে চাচা মোস্তফা হানিফ ধর্ষণ করেছেন। ওই মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিন মাস ১৭ দিন কারাভোগ করেন তিনি। তবে, তদন্তে ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
২০২৩ সালের ২৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। এরপর একই বছরের ৩ অক্টোবর মিথ্যা মামলা করার অভিযোগে মোস্তফা হানিফ বাদী হয়ে কাওসারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
মোস্তফা হানিফ বলেন, ‘‘আমি তিন মেয়ে নিয়ে ঝালকাঠির রাজাপুরে শ্বশুরবাড়িতে থাকি। বেতাগীতে নিজের বাড়িতে ঘর তুলতে গেলে ভাতিজা কাওসার তার বোনের মেয়েকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করে। আমি নির্দোষ প্রমাণিত হই, এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা করি।’’
রায়ে আদালত মন্তব্য করেন, কাওসার তার বোনের অল্পবয়সী মেয়েকে ব্যবহার করে চাচার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও জঘন্য মামলা করেছেন। এতে ভুক্তভোগীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। শত্রুতার কারণে ভবিষ্যতে যেন কেউ এ ধরনের মিথ্যা মামলা না করে, এই রায়ের মাধ্যমে সমাজে সেই বার্তা পৌঁছে যাবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রনজুয়ারা সিপু বলেন, ‘‘মোস্তফা হানিফ সৌদি আরবে একটি জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন। মিথ্যা মামলার কারণে তার চাকরিও হারাতে হয়। আদালত ন্যায়সঙ্গত রায় দিয়েছেন।’’
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জাফর ইকবাল বলেন, ‘‘আমার মক্কেল কাওসার এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।”
Leave a Reply