শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
 
								
                            
                       বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ মোহনকাঠির অধ্যক্ষ মো. জগলুল ফারুকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ, টিউশন ফি অনিয়ম, পুকুর লিজের টাকা আত্মসাৎ, হিসাব গোপন ও ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ নিয়ে ২০ অক্টোবর কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিখন বনিকের কাছে এক অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অধ্যক্ষ মো. জগলুল ফারুক সরকারি বরাদ্দের টিউশন ফি শিক্ষকদের না দিয়ে নিজের কাছে রেখেছেন। এছাড়া কলেজের পুকুর লিজের টাকাও কলেজ ফান্ডে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। কলেজ প্রাঙ্গণে রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার কাজের কোনো হিসাব কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।
এছাড়া, কলেজের ব্যাংক হিসাব থেকে ৬৫ হাজার টাকা তুলে খরচ করলেও কোনো হিসাব দেননি, প্রতিবছর নবায়ন ফি বাবদ শিক্ষকদের কাছ থেকে ২৫—৩০ হাজার টাকা নিয়ে তার মধ্যে মাত্র ১০—১২ হাজার টাকা খরচ দেখান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি নিয়মিত কলেজে উপস্থিত না থেকে একসাথে ১০—১৫ দিনের হাজিরা স্বাক্ষর করেন। এমনকি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন না করার অভিযোগও রয়েছে।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো, অবসরপ্রাপ্ত বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্যামল কান্তি কর গুপ্তের কাছ থেকে ছাড়পত্র দিতে এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন অধ্যক্ষ। টাকা না দেওয়ায় ওই শিক্ষক এখনও ছাড়পত্র পাননি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম করে আসছেন। এডহক কমিটির অভিভাবক সদস্য নাজমুল ইসলামও লিখিতভাবে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ইউএনও’র কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. জগলুল ফারুক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,“আমার বিরুদ্ধে একটি মহল মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। সব হিসাবই কলেজে রয়েছে, তবে এখন তা দেখাতে পারছি না।”
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন,“অধ্যক্ষের অনিয়মের বিষয়ে জেনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি লিখন বনিক জানান,“এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে অভিভাবক সমাবেশে মৌখিকভাবে কয়েকজন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a Reply