সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১১ অপরাহ্ন
বরিশাল নগরীর বেলতলা এলাকায় ভূমিকম্পের পর একটি ভবনের ওপর আরেকটি পুরাতন ভবন হেলে পড়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে মাহামুদিয়া মাদরাসা সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুটি ভবনেই মালিক ও ভাড়াটিয়ারা বসবাস করায় পুরো এলাকায় এখন চরম মৃত্যুঝুঁকির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৪ বছর আগে সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে চারতলা ভবন নির্মাণ করেন আব্দুল মোতালেব হাওলাদার। তবে পরে কোনো অনুমোদন ছাড়াই ভবনটি সাড়ে চার তলায় উন্নীত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তার পাশেই এক বছর আগে প্ল্যান অনুযায়ী চারতলা ভবন নির্মাণ করেন জাহির হাওলাদার। ভূমিকম্পের পর পুরাতন ভবনটি নতুন ভবনের ওপর হেলে পড়ে।
প্রতিবেশী মো. দুলাল জানান, “একটি ভবন আরেকটির ওপর হেলে আছে—এখনই ভেঙে পড়তে পারে। আমরা সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।”
আরেক বাসিন্দা হারিছুর রহমান স্বপন বলেন, “এ জায়গাটা আগে ডোবা ছিল। সেখানে ময়লা ফেলা হতো। এখন দুটি ভবন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকলেও আড়াই ফুট ফাঁকা রাখার নিয়ম মানা হয়নি।”
নতুন ভবনের মালিকের ছেলে ফাকের হাওলাদার বলেন, “আমাদের ভবন নতুন। পুরাতন ভবনটি দুর্বল হওয়ায় আমাদের ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। আমরা জীবনের ঝুঁকিতে আছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
অন্যদিকে পুরাতন ভবনের মালিক আব্দুল মোতালেব হাওলাদার দাবি করেন, “সকালে বের হয়ে দেখি নতুন ভবনটিই আমাদের ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। সম্ভবত ভূমিকম্পের সময় এ ঘটনা ঘটেছে।” ভবন নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে তিনি কোনো স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্থপতি সাইদুর রহমান লুসান বলেন, “তদন্ত ছাড়া কোন ভবন দায়ী তা বলা যাবে না। নিয়মিত তদারকির অংশ হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে দেওয়া হয়। তবে জনগণ সচেতন না হলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমানো সম্ভব নয়।” তিনি আরও জানান, তদন্তে বিল্ডিং কোড বা আইন অমান্যের প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনার পর বেলতলা এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ দুটি ভবন দ্রুত অপসারণ ও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
Leave a Reply